নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কার্যক্রমের আওতায় সিলেটে বিভাগীয় পর্যায়ে ৫ জন সফল নারীকে ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা’র সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফলতা দেখিয়ে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন আরও ১৫ জন। বুধবার দুপুরে সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফল এই ২০ নারীর হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও অর্থ সম্মানী।
এ বছর বিভাগীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকারী হিসেবে সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে মৌলভীবাজার জেলার বাসিন্দা শিক্ষিকা রাশেদা বেগম, সফল জননী হিসেবে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার গণিপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিমুননেছা চৌধুরী, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরুর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় সিলেট নগরীর বাসিন্দা প্রয়াত বীথিকা দত্ত ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা’র সম্মাননা পান। এছাড়াও পাঁচ ক্যাটাগরিতে বিভাগের ৪ জেলা পর্যায়ে আরও ১৫ জন নির্বাচিত নারীকে প্রদান করা হয়েছে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সংবর্ধনা ও পুরস্কার।
সফল জননী হিসেবে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা রহিমুন্নেছার বিয়ে হয়েছিল মাত্র ১৪ বছর বয়সে। একই গ্রামের দিদার বক্ত চৌধুরীর সাথে সংসার বাঁধেন তিনি। ৭ ছেলে ও এক মেয়ের জননী তিনি। সন্তানদের পড়ালেখার ব্যাপারে সবসময়ই উদাসীন ছিলেন স্বামী দিদার বক্ত চৌধুরী।
নিজে পড়ালেখা না করতে পারার একটি দু:খ মনের ভেতর পুষতেন রহিমুননেছা। সন্তানদের শিক্ষিত করে সেই দু:খ ঘুচানোর প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। সেই প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নে অনেক প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে। শেষ পর্যন্ত সকল সন্তানকেই তিনি শিক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছেন। রহিমুননেছার সকল ছেলে-মেয়ে আজ দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। জীবনের পড়ন্ত বেলায় সন্তানদের সুখি-সমৃদ্ধ জীবন দেখে আত্মপ্রশান্তি উপভোগ করেন তিনি। তাই সবার প্রতি তার একটাই অনুরোধ, যতোই প্রতিবন্ধকতা আসুক সবকিছু পেছনে ঠেলে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করার। কৃতি এই নারীর সন্তানদের মধ্যে কেউ সরকারি চাকুরি থেকে অবসরে চলে গেছেন। কেউ কেউ নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে রাখছেন সততা ও মেধার স্বাক্ষর। মায়ের এই অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন তারা।
Leave a Reply