জকিগঞ্জে পৈতৃক সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে আইনগত সহায়তা চান মিতা বালা

নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: জকিগঞ্জের কাজলসার ইউনিয়নের সুনাপুর গ্রামের মিতা বালার পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তির ক্ষেতের জমি প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে তিনি আইনগত সহায়তা চান। প্রতিকার চেয়ে মিতা বালা সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। সিলেটের পুলিশ সুপার ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়কে দায়িত্ব দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, কামালপুরের মৃত রইছ আলীর পুত্র প্রভাবশালী মিসবাহ উদ্দিন ও ইজ্জাদ আলীর পুত্র আশিক আহমদ গংরা সোনাপুর গ্রামের মিতা বালার পরিবারের প্রায় আড়াই একর ভুমি জবর-দখল করে রেখেছেন। এনিয়ে গ্রাম্য সালিশও বসেছে বহুবার। ভুক্তভোগী পরিবারটি একাধিকবার আইনের আশ্রয় নিলেও পৈতিক সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে পারেনি।

সম্প্রতি সময়ে জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় সরেজমিন তদন্ত করে সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। প্রতিবেদন ও অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৪৭নং জে.এলস্থিত কামালপুর মৌজার ৭৬৩ ছাপা খতিয়ানের ১৫১৮ নং দাগে ৯৯শতক, ১৫২০ দাগে ১৫ শতক, ১৫২১ দাগে ২৩ শতক, ১৫৬৭ দাগে ৮ শতক, ১৬১৮ দাগে ৩৩ শতক, ১৭১২ দাগে ২৯ শতক, ২০১৫ দাগে ২২ শতক এবং ২৭৫ নং খতিয়ানের ১৫৭১ দাগে ১৭ শতক ভুমির এস.এ রেকর্ডীয় মালিক সোনাপুর গ্রামের মৃত হরস রামের পুত্র সাদ রাম নমশুদ্র। সাদ রাম নমশুদ্র নি:সন্তান অবস্থায় একমাত্র উত্তরাধিকারী আপন চাচতো ভাই ক্ষিতিশ বিশ্বাসের পুত্র সরজিত বিশ্বাসকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। এই ভুমি সরকারের ‘ক’ তালিকাভুক্ত হওয়ায় তফসিল বর্ণিত ভুমির উত্তরাধিকার মালিক সরজিত বিশ্বাসের স্ত্রী মিতা বালা বিশ্বাস বন্দোবস্ত নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে বকেয়া খাজনা আদায় সাপেক্ষে ১ একর ৫৯ শতক ভুমি মিতা বালা বিশ্বাসের নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। বন্দোবস্তপ্রাপ্ত মিতা বালার স্বামী তফসিল বর্ণিত ভুমিতে ধান রোপন করতে গেলে একাধিকবার মিসবাহ গংদের হাতে লাঞ্চিত হন।

প্রতিবেদনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জকিগঞ্জ সার্কেল সুদীপ্ত রায় বিবাদীদের এহেন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এ বিষয়ে যাতে আইন শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সে ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেন। পরে জকিগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মোহন রায় একাধিকবার সরজমিনে গিয়ে বাদীকে ধান রোপন ও পরিচর্যা করতে বিবাদী পক্ষ কোনরূপ বাঁধা প্রদান না করার জন্য মৌখিকভাবে সর্তক করে দেন।

মিতা বালা জানান, তার স্বামী চলিত মৌসুমে কয়েকবার জমি চাষ করে ধান রোপনের জন্য সরজমিনে গেলে বিবাদী পক্ষ তাড়িয়ে দিয়েছে। আইনী সহায়তার মাধ্যমে তিনি নিজের ভুমি দখলমুক্ত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ থানার এসআই মোহন রায় জানান, প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে ভূমিটি মিতা বালার পরিবারের সম্পত্তি ছিলো। পরে তা ‘ক’ খতিয়ানভূক্ত হয়ে যাওয়ায় মিতা বালা সরকার পক্ষ থেকে বন্দোবস্ত নিয়েছেন। বিবাদীদের দাবী তারা জমিটি ক্রয় করেছেন। তবে কোন প্রমানাদি দেখাতে না পারেননি। পরে আমি তাদেরকে বলেছি তারা যেন মিতা বালাকে হয়রানী না করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর