ঢাকা আবাহনীর হার এবার সাইফের জয়

শেষ বাঁশি বাজতেই ভেঁপু বাজাতে শুরু করলেন সাইফের সমর্থকরা। কোচ রায়ান নর্থমোর ও ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার নাসির চৌধুরী ফুটবলারদের বুকে জড়িয়ে ধরলেন। এ উল্লাস চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। প্রিমিয়ার লীগের প্রথম লেগে ঢাকা আবাহনীর কাছে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়া সাইফ জিতেছে ২-১ গোলে। সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে সাইফের হয়ে গোল দুটি করেন দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড। হাইতিয়ান ওয়েডসন আনসেলমি এবং যুক্তরাজ্যের চার্লস শেরিংহ্যাম। আবাহনীর হয়ে ব্যবধান কমান নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে সিজোবা। এ জয়ে ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো সাইফ। সমান ম্যাচ খেলা আবাহনী নেমে গেল চতুর্থ স্থানে। আবাহনীর আকর্ষণ যেমন ঘরোয়া ফুটবলের পরীক্ষিত নাইজেরিয়ান ফুটবলার সানডে সিজোবা, তেমনি সাইফের হয়ে ঢাকায় ফিরে আসা কয়েক মৌসুম জামালের হয়ে খেলা গোলমেশিন খ্যাত ওয়েডসন আনসেলমি। ২০১৪-’১৫ এবং ’১৫-’১৬ মৌসুমে শেখ জামালের হয়ে খেলেছিলেন ওয়েডসন। ঢাকার মাঠের কিং ছিলেন হাইতিয়ান এই ফরোয়ার্ড। জিতেছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। গেল মৌসুমে ইস্টবেঙ্গলে ডাক পেয়ে কলকাতায় চলে যান। এ বছর ফিরে এসেছেন। একটু মুটিয়ে গেছেন। দৌড়াতে গিয়ে কিছুটা হাঁপিয়ে উঠতে দেখা গেছে তাকে। দু’দলের হয়ে ফেরা দু’জনই গোল পেয়েছেন পেনাল্টি থেকে।

ম্যাচে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেনি ঢাকা আবাহনী। দুর্দান্ত খেলেছে সাইফ। তাদের আক্রমণে ঢাকা আবাহনীর ডিফেন্ডারদের বেসামাল অবস্থা হয়। ৩৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে আবাহনীর সীমানায় ঢুকে শট নেন জুয়েল রানা। বল সামাদ ইউসুফের হাত স্পর্শ করে। পেনাল্টির বাঁশি। গোল করেন ওয়েডসন (১-০)। দুই মৌসুম মিলিয়ে এর আগে ৪৪ গোল করেছিলেন এই ফুটবলার। ২২ মিনিটে ওয়ালী ফয়সালের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে প্রথম গোল পেতে পারত আবাহনী। ২৫ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেন শেরিংহ্যাম। কিন্তু তার শট বক্সে ব্লক করেন আবাহনীর ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার সামাদ ইউসুফ। ৭৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার কিকে হেড করেন সাইফের ইংলিশ ফরোয়ার্ড শেরিংহ্যাম। পরাস্ত হন সোহেল (২-০)। ৮৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে একটি গোল করেন আবাহনীর সানডে সিজোবা (১-২)।

ফরাশগঞ্জকে উড়িয়ে দিল চট্টগ্রাম আবাহনী

প্রিমিয়ার লীগের প্রথম লেগে ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে চমক দিয়েছিল ফরাশগঞ্জ। কিন্তু তাদের কোনো সুযোগই দেয়নি চট্টগ্রাম আবাহনী। বরং ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলে পুরান ঢাকার ক্লাবটিকে বিধ্বস্ত করেছে বন্দরনগরীর দলটি। সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দশজনের চট্টগ্রাম আবাহনী ৪-০ গোলে হারায় ফরাশগঞ্জকে। এ জয়ে ১২ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল চট্টগ্রাম আবাহনী। অন্যদিকে সমান ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকল ফরাশগঞ্জ।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মধ্যবর্তী দলবদলে যাচাই-বাছাই করেই বিদেশি ফুটবলার টেনেছে বড় দলগুলো। আস্থার প্রতিদানও দলকে দিচ্ছেন বিদেশি এই ফুটবলাররা। আগের ম্যাচে নতুন আসা ওয়েডসন যেমন সাইফের বড় জয়ে ভূমিকা রেখেছে, তেমনি ঢাকা আবাহনীকেও গোলের দেখা দিয়ে হারের ব্যবধান কমিয়েছেন সানডে চিজোবা। আর দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করেছেন সেন্ট প্রিয়ক্স। তার সহায়তায় দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন তৌহিদুল আলম সবুজ।

আগে গোল করে এগিয়ে থাকতে হবে- এমন প্রতিজ্ঞা করেই যেন মাঠে নামে চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের পাঁচ মিনিটে অধিনায়কোচিত কাজটি করে দলকে এগিয়ে দেন জাহিদ হোসেন (১-০)। ৩২ মিনিটে সেন্ট প্রিয়ক্সের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তৌহিদুল আলম সবুজ (২-০)। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে জাহিদ হোসেনের বাড়ানো বলে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন মনসুর আমিন (৩-০)। মিনিট দশেক পর ডানপ্রান্ত দিয়ে মামুনুল ইসলামের ক্রসে উড়ে আসা বল হেডে জালে জড়ান উদুকা এলিসন (৪-০)। অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা। ফরাশগঞ্জের বেশ ক’টি জোরালো আক্রমণ রানা প্রতিহত না করলে জয়ের ব্যবধান আরও কম হতে পারত বন্দরনগরীর দলটির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর