জকিগঞ্জ টুডে ডেস্ক:: জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়নের নিজগ্রামের আ.লীগ নেতা মুমিন হত্যায় জড়িত একজনসহ পরিকল্পনাকারী ৬ জনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক। কারাগারে প্রেরণকৃতরা হলো, হত্যায় জড়িত বারহালের নিজগ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে ওয়েছ আহমদ (৩৫), পরিকল্পনাকারী মৌলভী আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৫), মৃত সফিকুল ইসলামের ছেলে ফাহিম আহমদ (৪০), কামাল উদ্দিন (৫০), ছাব্বির আহমদ (৪৫), আব্দুস শুক্কুরের ছেলে সুলতান আহমদ (৩৮) ও মোস্তাক আহমদ (৩১)।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, শনিবার ভোর রাতে মুমিন হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত দ্বিতীয় আসামী নিজগ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে ওয়েছ আহমদ (৩৫)কে জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকারের নেতৃত্বে বড়লেখা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত ওয়েছ আহমদকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকার ব্যাপাক জিজ্ঞসাবাদ করলে মুমিন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম বেরিয়ে আসে।
রবিবার বিকেলের দিকে পুলিশ গ্রেফতারকৃত ওয়েছ আহমদকে জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করলে বিচারক মো. খাইরুল আমিনের খাসকামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সে মুমিন হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনায় জড়িত ও পরিকল্পনাকারীদের নাম প্রকাশ করার পর বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। হত্যায় জড়িত ওয়েছ আহমদের জবানবন্দি মতে ঐদিন রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকারের নেতৃত্বে মুমিন হত্যার পরিকল্পনাকারী ৬ জনকে বারহাল ইউনিয়নের নিজগ্রাম থেকে আটক করা হয়। সোমবার পরিকল্পনাকারী আটক সেই ৬জনকে পুলিশ আদালতে প্রেরণ করলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এদিকে আদালতে পরিকল্পনাকারী সেই ৬ জনকে প্রেরণের সময় এক প্রতিবেদনে মামলার আইও ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার উল্লেখ করেন, মুমিন হত্যার আসামী ওয়েছ আহমদকে গ্রেফতারের পর আদালতে প্রেরণ করলে সে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে গ্রেফতারকৃত ও এজাহারনামীয় অপরাপর আসামীরা আব্দুল মুমিনকে মারতে পারলে টাকা পয়সাসহ সব ধরণের সহযোগীতা করিবে মর্মে প্রকাশ করে।
ওসি আরও উল্লেখ করেন তদন্তে প্রকাশ পায়, আসামীদের পরিকল্পনামতে আব্দুল মুমিনকে গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১২টায় প্রাণনাশক অস্ত্র-শস্ত্র ধারালো ডেগার, দা, চাকু ও লোহার রড দিয়ে মাথায়, পেটে, ডান ও বাম পায়ের উরুতে, ঘাড়ে, মুখে, গালে, ঠোটে, কটায় উপর্যুপরি পাড় ও ছেদ মেরে রক্তাক্ত জখম করে।
অন্যদিকে, গত ২ অক্টোবর মামলার বাদী নিহত আব্দুল মুমিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের জন্য অন্য কোন নিরপক্ষ সংস্থায় স্থানান্তর করতে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন। ঐদিন আবার সিলেটের দুটি প্রেসক্লাবে নিহত আব্দুল মুমিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার সংবাদ সম্মেলন করে হত্যা মামলাটির তদন্তে আইও’র গাফলতির কথা তুলে ধরে সঠিক তদন্তের দাবী জানান।
মুমিন হত্যার পরিকল্পনাকারী ৬ আসামী ও জড়িত একজনকে গ্রেফতার করায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মামলার বাদী সেলিনা আক্তার বলেন, মুমিন হত্যা মামলাটি সুষ্ঠভাবে তদন্ত হলে জড়িত আরো অনেকের নাম বেরিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ মধ্য রাতে বারহালের নিজগ্রামে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মুমিনের উপর হামলা করা হয়। পরে আহত আব্দুল মুমিনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে তাকে প্রেরণ করেন। সেখানেই ২৬ মার্চ ভোর বেলায় আব্দুল মুমিন মৃত্যু বরণ করেন।
Leave a Reply