সিলেটে ‘রাজনৈতিক সম্প্রীতির ইতিহাস ধুলিস্মাৎ: আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিদলীয় মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনকে ‘মীর জাফরের নির্বাচন’ বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি ‘সেনাবাহিনী নিয়ে নির্বাচনে আসতে’ সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন।

সোমবার বিকেলে নগরীর কাজীটুলাস্থ নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আরিফ।

বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের নির্বাচন আমি আমার এ জীবনেও দেখি নাই। এটা মীরজাফরের নির্বাচন। দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আশফাক আহমদ, আজাদুর রহমান আজাদ, রণজিত সরকার মাইক্রোবাস দিয়ে ঘুরে ঘুরে ভোট জালিয়াতি করেছেন।’

আরিফ অভিযোগ করেন, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার নিজের কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। কাজী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে অনবরত ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। মহিলা পুলিশরা বসে বসে ভোট দিয়েছেন। আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে, মারধর করা হয়েছে। সকাল থেকে সব কেন্দ্রে ধারাবাহিকভাবে জাল ভোট দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গত রাত ২টার পর থেকে কাজী জালাল উদ্দিনে আইনশৃঙখলা বাহিনীর সামনে ভেতরে ঢুকে ব্যালটে সিসল মারা হয়।’

আরিফ বলেন, ‘আমরা কার কাছে বিচার দেব? আল্লাহর কাছে বিচার দেয়া ছাড়া এ দেশে বিচার দেয়ার আর জায়গা নাই।’

নগরবাসী ও ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত, আমার বাসায় গিয়ে বৃদ্ধ মহিলারা বলেছেন, ‘তুমি আমাদের মেয়র, আমরা তোমাকে ভোট দিতে গিয়েছিলাম, আমাদের ভোট হাইজ্যাক হয়েছে।’ আমি ভোটারদের প্রতি সম্মান জানাই, তারা এতো বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। ভোট কেন্দ্র ছেড়ে যান নি।’

সিলেটে ‘রাজনৈতিক সম্প্রীতির ইতিহাস ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল’ মন্তব্য করে আরিফ বলেন, ‘এটা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য শুভ নয়। এই কালচার দেশের জন্য ক্ষতিকর।’

নির্বাচন কমিশনকে ‘মেরুদন্ডহীন’ মন্তব্য করে আরিফ বলেন, ‘তাদের মতো অকার্যকর নির্বাচন কমিশন কিভাবে টেলিভিশনের সামনে এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করে? ভোট ডাকাতির নির্বাচন আবার প্রমাণ করলো, এই নির্বাচন কমিশনার মেরুদন্ডহীন। ইসির লজ্জা-শরম থাকলে তারা পদত্যাগ করতো। ’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনই শেষ নির্বাচন নয়। আমরা শিক্ষা নিলাম। গণতন্ত্রের জন্য আমাদের আন্দোলন। খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

তিনি সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, সেনাবাহিনী নিয়ে নির্বাচনে আসুন, দেখুন আপনাদের কি অবস্থা হয়।’

‘নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ হলে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতেন বলেও মন্তব্য করেন আরিফ।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচন বর্জন করি নাই। কারণ বর্জন কোনো সমাধান নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর