রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপে সহযোগিতা করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে চীন। সফররত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আজ শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপে সহযোগিতা করতে তাঁর দেশের আগ্রহের কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম। তিনি চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আমরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।’ চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অথচ এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, যা বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। খবর বাসসের।
বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর (বিসিআইএম-ইসি) সম্পর্কে আলাপকালে ওয়াংই বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে চার জাতির উদ্যোগের গতি মন্থর হোক তা চীন চায় না।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ বৃদ্ধির জন্য চীনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে তাঁর দেশের নাগরিকদের নিরাপদে, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গারা তাদের লোক এবং তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।’
রোহিঙ্গাদের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তাদের মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা চালানোর জন্য কাউকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া আমাদের সিদ্ধান্ত।’
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১০ ও ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর এবং চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের সম্মত হওয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার কো-অপারেশনের (কৌশলগত অংশীদার সহযোগিতা) অগ্রগতি দেখতে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর দেশের প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে ওয়াংই বাংলাদেশকে দেওয়া তাঁর দেশের রেয়াতি ঋণ ৫০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতার আওতায় বাংলাদেশকে আরও বেশি সহযোগিতা করতে চায় চীন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং গণভবনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply