আসাম জুড়ে উত্তেজনা: ৬০ হাজার পুলিশ ও আধা সামরিক সদস্য মোতায়েন

আসামজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত সরকার। কথিত অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার লক্ষ্যে ভারতের আসামে নাগরিকদের নামের তালিকা প্রকাশকে ঘিরে রাজ্যটিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ (৩১ ডিসেম্বর) ওই তালিকা প্রকাশকে সামনে রেখে এরইমধ্যে আসামে প্রায় ৬০ হাজার পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। মূলত আসামে ‘অনুপ্রবেশকারী’ মুসলিমদের বিতাড়নের জন্য তালিকাটি ব্যবহার করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিজেপি সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ আসামে সা¤প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছর আসামে সরকার গঠন করে। অনুপ্রবেশকারীরা স্থানীয় হিন্দুদের কর্মসংস্থান নষ্ট করছে দাবি করে ‘অবৈধ’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার শপথ নেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় একটি আদমশুমারি চালানো হয়। ১৯৫১ সালের পর এটিই আসামে পরিচালিত প্রথম আদমশুমারি। অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত ও বিতাড়িত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে আজ রবিবার জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) তালিকাটির খসড়া প্রকাশ করবে আসামের বিজেপি সরকার।

নাগরিক নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, আসামে বসবাসরত অবৈধদের চিহ্নিত করতেই এনআরসি করা হয়েছে। এতে যাদের নাম থাকবে না, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। এখানে আমরা কোনও সুযোগ নিচ্ছি না এবং সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। তবে যেসব হিন্দু নিপীড়নের শিকার হয়ে আসামে আশ্রয় নিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি অনুসারে তাদের আসামে আশ্রয় দেয়া হবে বলেও জানান বিশ্ব শর্মা। অবশ্য এ ব্যাপারে দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে বিজেপি সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ আসামে সা¤প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। মুসলিম জনসংখ্যার দিক থেকে রাজ্যটির অবস্থান ভারতে দ্বিতীয়।

স্থানীয় মুসলিম নেতাদের অভিযোগ, এনআরসিকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও রাষ্ট্রহীন করা হবে। আসামে ২০ লাখেরও বেশি মুসলিম রয়েছে। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করার জন্য তাদের পরিবার যে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে সেখানে বাস করছেন তার প্রমাণ দিতে হবে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তবে মুসলিমদের কেউ কেউ বলছেন, তাদের পূর্বসূরীরা এসব প্রমাণ বা নথি সংরক্ষণ করার কথা বুঝতে পারেননি। রয়টার্স, এনডিটিভি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর