একটি ফুটফুটে অসহায় মেয়ের কথা বলছি…

ম.জ.ছালেহীন:: জকিগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের মেয়ে ইমরানা আক্তার। ব্যাংকার বাবা মায়া করে ডাকতেন ইমা। ইমা মানে মাই। ইমাকে উল্টালে হয় মাই। সেই বাবাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এখন আর তাকে কেউ ইমা ডাকে না। তার বাবার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। একজন সজ্জন ব্যাক্তি হিসেবে সমাজে তার পরিচিতি ছিল। দেখা হলেই হেসে হেসে বলতেন, “ভাই, কেমন আছেন? ভালো আছেন- তো? আমার ছেলেমেয়ে গুলোর জন্য দোয়া করবেন।” আমিও দোয়া করব বলে হেসে হেসে বিদায় নিতাম। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তার মেধাবী ছেলে-মেয়েগুলো এখন দারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

সম্প্রতি ইমা’র সাথে আমার কথা হয়। ইমা জানায়, তারা দুই বোন ও তিন ভাইকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তার বাবাকে হারানোর পর থেকে বাবার পেনশনের টাকায় দিন কাটছিল না। তাই তার এক ভাই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েই গাড়ী চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছে। তাতেও সংসার ঠিকমত চলছিল না বলে এই অসাধারণ মেধাবী মেয়েটি যে স্থানীয় একটি কলেজে মানবিক বিভাগে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বেসরকারী স্কুলে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করে সংসার ও ছোট ভাইবোনের পড়াশোনার খরছ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও তাতে ঠিকমত সবকিছু চলছে না তবুও সে দমবার পাত্রী নয়। সুযোগ পেলে সে আরো বড় কিছু করার চেষ্টা করবে। এজন্য সে সকলের দোয়াপ্রার্থী।

সে আরো জানায়, তার একমাত্র ছোট বোনটি মানসিক প্রতিবন্ধী। অর্থনৈতিক টানাপোড়নে বোনটির সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেনা। এই বোনটির জন্যও সে সকলের নিকট দোয়া কামনা করছে। আমরাও বিষয়টির দিকে সুনজর দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ প্রতিবন্ধী বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং আশা করছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অনুধাবণ করে এই অসহায় কিন্তু মেধাবী পরিবারটিকে দারিদ্রের করাল গ্রাসে শিক্ষার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হওয়া থেকে রক্ষা করবেন।

আমরা দোয়া করিঃ মহান আল্লাহ যেনো এই ফুটফুটে মেধাবী ইমা’কে সকল সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য ধ্যৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন যেনো মেয়েটি এগিয়ে যায় আরো সুন্দরে, সুফলে, সৃজনশীলতায়।। জয়তু মামণি ইমা….. জয়তু……..

[লেখকঃ শিক্ষক ও কলামিষ্ট]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর