দল সামলাতেই হিমশিম বেগম জিয়া

আন্দোলন বা নির্বাচন নয়, দল সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন বেগম জিয়া। দফায় দফায় বৈঠক করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, দলের ঐক্যের গান গাইছেন, তবুও নিশ্চিত হতে পারছেন না। বিএনপির একটি বড় অংশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এরা আর বেগম জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে পারছেন না। বেগম জিয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচনের বিপক্ষে গেলে বিএনপির ভাঙ্গন এখন অবধারিত।

শুধু দেখার বিষয় ভাঙ্গন কত বড় হয়। বিএনপির সিংহভাগ নেতাই একমত, ২০১৪ সালের ভুল এবার করা ঠিক হবে না। বিএনপির অনেক নেতাই প্রকাশ্য-গোপনে বৈঠক করছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, একমাত্র যাঁদের কোনো নির্বাচনী আসন নেই, তাঁরাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার আওয়াজ তুলছে। বাকিরা সব নির্বাচনের মাঠে নেমে গেছেন।’ বেগম জিয়াও দেশে ফিরে বুঝতে পারছেন, সব সামলানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য তিনি প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর তিনি ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সবাইকে নরমে গরমে বোঝাতে চেয়েছেন। আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে কেন যাওয়া যাবে না। সম্প্রতি উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বেগম জিয়াকে একজন উপদেষ্টা বরেছেন, ‘ম্যাডাম আপনার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা বের করেন, একবার নির্বাচনের মাঠে নেমে গেলে বাঁশি ফুকানোর লোকও পাওয়া যাবে না।’

বিএনপির মধ্যে এই মত তীব্র হচ্ছে যে, ক্ষমতায় না যেতে পারি, সম্মানজনক সুস্থ রাজনীতির জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচনে বিরোধী দল হলেও মামলা, হামলা বন্ধ হবে, ফিরারি জীবনের অবসান হবে- এই মত অনেকের।
একজন বিএনপি নেতা তো বলেই ফেললেন, ‘কর্মীরা নির্বাচনের জন্য পাগল, তাঁরা জানে মাঠের অবস্থা কী। তাই তাদের এবার নির্বাচন থেকে দূরে রাখা অসম্ভব।’ তবে, বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসল ইস্যু না, বেগম জিয়া চান নির্বাচনের আগে যেন দন্ডিত না করা হয়।

নির্বাচনের যোগ্য থাকলে শেখ হাসিনার অধীনেই বেগম জিয়া নির্বাচন করবেন-এমন অভিমত অনেকের। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের বেগম জিয়া এই বার্তাই দিয়েছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাসহ দলের বড় বড় নেতাদের মামলাগুলোকে নির্বাচন পর্যন্ত পেছালে তিনি নির্বাচনের বিষয়ে ভাববেন। কিন্তু সরকার স্পষ্ট করেই বলছে, আইন তাঁর নিজস্ব গতিতে চলবে। মামলায় বেগম জিয়ার দণ্ড হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত, সরকার নয়। অখন্ড বিএনপির নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্তের প্রধান বাধাই হলো ‘মামলা’। বিএনপি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট আশ্বাস চায়। কিন্তু কর্মীরা চায় নির্বাচন, তা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে হোক বা তাঁর অযোগ্যতায় অন্য কারও নেতৃত্বে।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর