আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: রাত পোহালেই ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৪র্থ ধাপে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হবে। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে নির্বাচনী সরঞ্জাম প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উপজেলার ৭৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার দূরবর্তী ২৯টি ভোটকেন্দ্রে মঙ্গলবারে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। আর ৪৮ টি ভোটকেন্দ্রে ভোটের দিন ভোরবেলা ব্যালেট পেপার পাঠানো হয়েছে। একটি পৌরসভা ও ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৫১৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৯৯ হাজার ২২৫ জন এবং নারী ভোটার ৯২ হাজার ২৮৮ জন।
নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফসানা তাসলিম বলেন, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নেই। মঙ্গলবার সকল ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে এবং বন্যা কবলিত ও দূরবর্তী ২৯টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালেট পেপার পাঠানো হয়। নির্বাচনী এলাকায় ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১ প্লাটুন র্যাব, ৩ প্লাটুন বিজিবি ও ১ প্লাটুন ব্যাটািলয়ন আনসারসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলার ৭৭ টি ভোটকেন্দ্রে ৭৭ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৪৭০টি বুথে পোলিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ মোট ১৪১০ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন। তিনি আরও বলেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন ৫টি ভোটকেন্দ্রকে স্থানান্তর করে নতুন ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করেছে। নতুন ভোটকেন্দ্রগুলো হলো বারহাল হাটুবিল গাউসিয়া মাদ্রাসা, বালাউট মাদ্রাসাতুল মদিনা, বেউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লোহারমহল ফয়জুল মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসা, জকিগঞ্জ পৌর এলাকার জামেয়া ইসলামিয়া।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ জানান, নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৩২ টি ভোটকেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় ৮০০ পুলিশ ও প্রায় ১৬শ আনসার সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এদিকে, আজ বুধবার দিন গড়িয়ে বিকেল হলেই পাওয়া যাবে ভোটের ফলাফল। ঝড়বৃষ্টি না হলে ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার অনেক এলাকা এখনো বন্যার পানিতে জলমগ্ন থাকায় ওই এলাকার ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে একাধিকজন জানিয়েছেন।
বিভিন্ন এলাকার সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী ও জমিয়ত নেতা মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াই হবে। প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী জাপা নেতা মর্তুজা আহমদ চৌধুরী ও জাপা নেতা আব্দুশ শুক্কুরও বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আল ইসলাহ নেতা মাওলানা আব্দুস সবুর, উপজেলা যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম সুহেল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজমল হোসেনের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভোটের মূল লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক লস্করও চলে আসতে পারেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মাজেদা রওশন শ্যামলী ও সুলতানা বেগম শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
Leave a Reply