আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হোটেল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন লিচু (৪২) হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত জাকারিয়া আহমদ (২৫), মামুন আহমদ (২২), জুবেল আহমদ (২৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অত্যন্ত দুর্গম নিঝুম দ্বীপ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শেখ মো. সেলিম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে কাজলসার ইউপির মঙ্গলসার গ্রামে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সওয়াব আলীর ছেলে ভাগ্নে জাকারিয়া আহমদের নেতৃত্ব মৃত সৈয়ব আলীর ছেলে আবুল হোসেন লিচুকে লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় ঐদিন রাতে থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহত আবুল হোসেন লিচুর স্ত্রী শারমিন আক্তার সুমি (২৬)। পুলিশ তাৎক্ষণিক এজাহারভূক্ত আসামি চায়না বেগম (৪০) কে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
যেভাবে প্রধান আসামিসহ ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়: বিশ্বস্থ সূত্রে জানাগেছে হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ আসামি ধরতে টানা অভিযান শুরু করে। ঘটনার পরদিনই জাকারিয়ার মা চায়না বেগমকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। মূল আসামিসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের তিনটি টিম পৃথকভাবে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ আসামিদের বিশ্বস্থ কুমিল্লার দুইজনের সন্ধান পায়। পরে সেখানে গিয়ে আসামিদের পরিচিত দুজনের সূত্রধরেই মূল আসামি জাকারিয়াসহ ৩ জনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে হাতিয়ার দ্বীপ এলাকা থেকে সেখানকার থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক লিটন চন্দ্র রায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শেখ মো. সেলিম উল্লেখ করেন, নিহত আবুল হোসেন লিচুর সঙ্গে গ্রেফতারকৃত আসামিদের জায়গা জমি নিয়ে পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছিলো। ঘটনার দিন সকালে আসামিরা আবুল হোসেন লিচুকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে তিনি জুমার নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় না করে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। একই দিন দুপুরে আসামিরা তার বাড়িতে আসে এবং চার বছরের ছোট ছেলেকে পেয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। লিচু মিয়া তার ছেলেসন্তানকে আসামিদের কবল থেকে উদ্ধার করতে গেলে গ্রেফতারকৃত ও এজাহারে উল্লেখিত অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরেই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বুধবার ভোরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক লিটন চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অত্যন্ত দুর্গম নিঝুম দ্বীপ থেকে হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত মঙ্গলসার গ্রামের ছওয়াব আলীর ছেলে জাকারিয়া আহমদ, একই গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে মামুন আহমদ ও জুবেল আহমদকে গ্রেফতার করেন। হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply