নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, কারাবন্দী আলেম-উলামা এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও রাজনৈতিক সকল মামলা প্রত্যাহারসহ কেন্দ্র ঘোষিত ৮ দফা দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জকিগঞ্জে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর অধ্যাপক সিরাজুল হক বলেছেন, বর্তমান সরকার অধিকাংশ বিরোধী দলের ন্যায্য দাবিকে উপেক্ষা করে ও উল্টো বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সরকার দল দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সরকারের সহ্য হয়না। সরকারি দলের কোন কোন নেতা হুমকি ধমকি দিয়ে কথা বলছেন। যা অপরাজনীতির জন্য শুভনীয় হলেও সুস্থ ধারার রাজনীতির জন্য অশুভ সংকেত দিচ্ছে।
তিনি সরকারি দলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশের রাজনীতিকে সংঘাত ও অনিশ্চয়তার দিকে না নিয়ে সময় থাকতে সমঝোতার পথে আসুন। বিরোধী দলের ন্যায্য দাবীর প্রতি মনোযোগ দিন। অহেতুক কালক্ষেপন করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার দুরভিসন্ধি পরিহার করুন। সরকারের অক্ষমতার সুযোগে বিদেশীরা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ পাচ্ছে। বিরোধী পক্ষের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে সমঝোতায় বসুন। বিদেশীদেরকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ দিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে দেবেন না। রোববার বিকেলে জকিগঞ্জ শহরের এমএ হক চত্ত¡রে খেলাফত মজলিস জকিগঞ্জ উপজেলা ও পৌর শাখার গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জকিগঞ্জ উপজেলা শাখা সভাপতি শায়খ মাওলানা আবদুল মুছাব্বিরের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলাউদ্দিন তাপাদার, পৌর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবদুল হামিদ জালালের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা মুখলিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি রুহুল আমীন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, সরকারের ছত্রছায়ায় দেশে কতিপয় মজুদদার সিন্ডিকেট বাজারে অস্বাভাবিক পণ্যমূল্যের জন্য দায়ী। চাল, ডাল, তৈল, আটা, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে সিন্ডিকেটের হাত নেই। সিন্ডিকেটের কাছে গোটা জাতি আজ জিম্মি। বিদ্যুৎ সেক্টরে কুইক রেন্টাল দুর্নীতির কুফল আজ জাতি হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে সরকারদলীয় লোকজনের কোম্পানি দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করার সুযোগ পাচ্ছে। জনগণের অর্থ থেকে ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে তারা সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। অথচ এসব কোম্পানি দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করছেনা। এভাবে দেশের প্রতিটা সেক্টর থেকে এরা লুটে-পুটে খাচ্ছে। শেয়ার বাজার, ব্যাংক-বাণিজ্য কোন সেক্টর লোটপাটের বাকি নেই। তিনি আরও আরো বলেন, দুর্নীতিবাজদের হটিয়ে দেশে ন্যায়-ইনসাফ কায়েম করতে হবে। সে লক্ষেই খেলাফত মজলিসের রাজনীতি। ১৪ অক্টোবর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে আগামী দিনের জাতীয় মুক্তির দিকনির্দেশনা ও কর্মসূচি ঘোষণা করবে খেলাফত মজলিস। সেই সমাবেশে সবাই অংশগ্রহণ করতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রমিক মজলিসের সিলেট জেলা সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ূম, ইসলামী যুব মজলিস সিলেট জেলা সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা জারির হোসাইন, খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা নির্বাহী সদস্য মাওলানা আবদুস সালাম, উপজেলা সহ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল আহাদ, মাওলানা আবদুল করীম, হাফিজ আবদুল হালিম, আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা আবদুল কাদির প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা জকিগঞ্জ-শেওলা সড়ক এবং সিলেট-বুরহান উদ্দিন সড়ক দ্রুত সংস্কারের জোর দাবীও তুলেন।
Leave a Reply