আল হাছিব তাপাদার:: ১৫ আগস্ট ছিলো স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করছে দিনটি।
তবে এ দিনের কর্মসূচি পালনে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন জকিগঞ্জের জোবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কয়েক যুগ আগের মত ব্ল্যাকবোর্ডে চক দিয়ে দিবসের নাম লিখেই দায় সেরেছেন শিক্ষকরা। তাও বানানে ছিলো ভূল। বিদ্যালয়ে সাটানো হয়নি শিক্ষা অফিস থেকে সরবরাহকৃত শোক দিবসের পোস্টারও। এ নিয়ে অভিভাবকসহ সকলের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে উঠেছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ।
একাধিক অভিভাবক বলেছেন, জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের নামে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম জাতির জনকসহ তাঁর পরিবারের শহীদগণের প্রতি চরম অবজ্ঞা করেছেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে এড়িয়ে স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষকে নিয়ে সকল কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। শোক দিবসের কর্মসূচি পালনেও হয়তো তিনি স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষের পরামর্শক্রমে ব্ল্যাকবোর্ডে চক দিয়ে ভূল বানানে শোক দিবস লিখে নিজের দায় সেরেছেন।
অনেকে আবার প্রশ্ন রেখে বলেন, স্কুলের অন্য অনুষ্ঠানগুলোতে ঝাকঝমকপূর্ণ ব্যানার ছাটানো হলেও শোক দিবসের আলোচনা সভায় পোস্টার ও ব্যানার নেই কেন? কোন শক্তির বলে প্রধান শিক্ষক শোক দিবসকে অবজ্ঞা করলেন। ১৫ আগস্ট পালনের জন্য স্কুলের তহবিলে কি ২ থেকে ৩শ টাকার একটি ব্যানারের টাকা নেই?
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল খালিক মেম্বার বলেন, শোক দিবসের কর্মসূচি পালন নিয়ে প্রধান শিক্ষক আমাদের সাথে কোন আলোচনা করেননি। আমি অনুষ্টানে ছিলাম না। জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবজ্ঞা করা হয়েছে তা মেনে নিতে কষ্ট হয়। জাতির জনকের প্রতি অবজ্ঞার ঘটনাটি তদন্ত করে বিচার হওয়া দরকার। প্রধান শিক্ষক স্কুলের সকল কর্মকান্ডে ম্যানেজিং কমিটিকে এড়িয়ে চলেন।
শিক্ষানূরাগী সদস্য নোমানুর রশিদ বলেন, প্রধান শিক্ষক স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে খুশি করতে এমনটা করেছেন। স্কুলের সকল কর্মকান্ড স্বাধীনতা বিরোধীদের বুদ্ধিতে হয়। ১৫ আগস্টের কর্মসূচির মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারকে চরম অবজ্ঞা করা হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষের শিক্ষকদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরাও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবেনা। ঘটনাটির বিচার হওয়া দরকার।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, বিদ্যালয়ে ঈদের ছুটি থাকার কারণে শোক দিবসের ব্যানার তৈরী করা সম্ভব হয়নি। ব্যানার তৈরী না করলেই যে বঙ্গবন্ধুকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, এটা বলা ঠিক হবেনা। শিক্ষা অফিস থেকে আমার কাছে কোন পোস্টার ও নির্দেশনা দেয়া হয়নি। সরকারি কর্মসূচি পালন করতে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলাপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, আমি প্রতিটি বিদ্যালয়ে শোক দিবসের পোস্টার পাঠিয়ে দিয়েছি এবং ব্যানার তৈরী করে আলোচনা সভা করতে চিঠি আকারে নির্দেশনা দিয়েছি। এরপরও জোবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেন ব্যানার ছাড়া শোক দিবস পালন করা হলো তা আমি বুঝতে পারছিনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
Leave a Reply