আল হাছিব তাপাদার:: জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশে আলোচিত হচ্ছেন কেন্দ্রীয় জাপার নির্বাহী সদস্য লন্ডন প্রবাসী শিল্পপতি জাকির হুসেন। তাঁর বাড়ী জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাজলগ্রামে। শনিবার (২৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায় জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ। এ মহাসমাবেশে তিনি ব্যক্তিগত কারণে উপস্থিত হতে না পারলেও লন্ডনে বসে জকিগঞ্জ-কানাইঘাট উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ছোট-বড় প্রায় শতাধিক গাড়ী ভাড়া করে দিয়েছেন দুটি উপজেলার নেতাকর্মীদেরকে। এতে তিনি রাজনৈতিক অঙনসহ দেশ-বিদেশে আলোচিত হয়ে উঠেছেন। তাঁকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও জল্পনা কল্পনা। র্দীঘদিন থেকে ঝিমিয়ে পড়া জাপার কর্মীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। উৎফুল্ল ভাব বিরাজ করছে অঙ্গ সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে। মহাসমাবেশ উপলক্ষে শুক্রবার রাতে উৎসবমুখর পরিবেশে জাকির হুসেনের ছবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে নেতাকর্মীরা প্রচার মিছিল করেছে জকিগঞ্জ শহরে। মিছিল শেষে তারা জাকির হুসেনের দেয়া গাড়ী চড়ে ঢাকার মহাসমাবেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
জাকির হুসেনের অনুসারীরা জানিয়েছেন, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার দুটি পৌরসভা ও প্রতিটি ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ড থেকে জাপা ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মীরা জাকির হুসেনের গাড়ী চড়ে মহাসমাবেশে যোগদান করছেন। নেতাকর্মীদের মাঝে লেগেছে সংসদ নির্বাচনের আগাম হাওয়া। আগামী নির্বাচনে পার্টির প্রার্থী নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। সীমান্তঞ্চলের নেতাকর্মীরা সুযোগ পেলে সিলেট-৫ আসনে জাকির হুসেনকে প্রার্থী দেয়ার দাবী জানাবেন সমাবেশে।
জাপার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, সিলেট জেলা ছাত্রসমাজের সাবেক এই সভাপতি এক সময় এরশাদের মুক্তির দাবীতে সিলেটের রাজপথকে কাঁপিয়ে তুলেছিলেন। ৯০ দশকের পরে তিনি লন্ডনে ব্যবসার জন্য পাড়ি জমান। গেল বছর লন্ডনে বৃটিশ বাংলাদেশী শ্রেষ্ট শিল্পপতি নির্বাচিত হয়ে পদক লাভ করেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে উঠা জাকির হুসেন সিলেট-৫ আসনটি ধরে রাখতে চান। এ লক্ষে জকিগঞ্জ-কানাইঘাট উপজেলার নিষ্ক্রিয় হওয়া নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে লন্ডন থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। এক সময় জাতীয় পার্টির দূর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনের নেতাকর্মীরা এখন বহু বলয়ে বিভক্ত। দলীয় অন্তদ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে জাকির হুসেন নির্বাচনের আগেই দেশে ফিরবেন। সিলেট-৫ আসনকে জাপা নেতাকর্মীরা হাতছাড়া করতে চাননা।
দিনমজুর খালিক আহমদ মন্তব্য করে বলেন, জাকির হুসেন কর্মী দরদী নেতা। তাঁর পক্ষে সম্ভব জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের বিভক্ত জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করা। প্রকৃত রাজনীতিবীদ যেকোন দলেরই হোন না কেন তাঁর হাতে ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন। জাকির হুসেনের মত রাজনীতিবীদকে দিয়েই এ সংসদীয় আসনের বিরাজমান সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।
প্রবীন জাপা নেতা কাশেম আলী বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে জাপার সেলিম উদ্দিন এ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। তিনিও এমপি হয়ে পার্টির কোন্দল নিরসন করে নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু স্থানীয় দু-একজন সিনিয়র নেতা সহযোগীতা করেননি। উল্টো দলীয় এমপির সাথে সাধারণ নেতাকর্মীদের দূরত্ব সৃষ্টি করার চেষ্ঠা করেছেন। আগামী নির্বাচনে সেলিম উদ্দিন এমপি নিজের সংসদীয় আসন গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার থেকে মনোনয়ন চাইবেন। সিলেট-৫ আসনে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে জাপার প্রার্থী চূড়ান্ত করা জাপার এ আসনের কর্ণধার হবেন জাকির হুসেন। নেতাকর্মীদের সাথে তাঁর যোগাযোগ বেশী থাকায় দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে তিনি এগিয়ে রয়েছেন।
জকিগঞ্জ উপজেলা জাপার প্রচার সম্পাদক আব্দুল আহাদ বলেন, ঢাকার মহাসমাবেশে যাওয়া-আসার কোন ব্যবস্থা না থাকায় নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশ ছিলেন। পরে জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হুসেন জকিগঞ্জ-কানাইঘাট উপজেলার সকল নেতাকর্মীদের জন্য প্রায় শতাধিক গাড়ীর ব্যবস্থা করে দেন। তাঁর দেয়া গাড়ী চড়েই জকিগঞ্জ-কানাইঘাট উপজেলার বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মী ঢাকার মহাসমাবেশে যান। জাকির হুসেনের মহতি উদ্যোগের কারণে পার্টির বাইরেও তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ত্যাগী এই নেতাকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দিতে আমরা হাইকমান্ডের কাছে দাবী জানাবো। সিলেট-৫ আসনে তাঁকে দলীয় টিকেট দিলে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এ আসনকে আবারো জাতীয় পার্টির দখলে রাখবে বলে তিনি দাবী করেন।
Leave a Reply