জকিগঞ্জে ভয়ঙ্কর বন্যার আশঙ্কা, চরম দুর্ভোগে মানুষজন

জকিগঞ্জে ভয়ঙ্কর বন্যার আশঙ্কা, চরম দুর্ভোগে মানুষজন

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। একের পর এক এলাকায় নদী ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হওয়ার পথে। উজানের ঢলে হুহু করে কুশিয়ারা-সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। বালু ভর্তি বস্তা ফেলেও কোথাও কোথাও ডাইকের উপর দিয়ে আসা পানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। প্লাবিত হয়ে পড়েছেন প্রায় সকল ইউপির মানুষ। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। বন্যার পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির সাপের উপদ্রবও দেখা গেছে। গৃহপালিত পশু নিয়ে বিপাকে আছেন কৃষকরা। পানি বাড়তে থাকলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।

জানাগেছে, বন্যাকবলিক প্রায় নয়টি ইউপির বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে গেছে। পানি বেড়ে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নতুন করে ভেঙ্গে গেছে জকিগঞ্জ সদর ইউপির কুশিয়ারা নদীর ডাইক, বিরশ্রী ইউপির সুপ্রাকান্দী গ্রামের ডাইক। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডাইকের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। পুরো উপজেলায় প্রায় অর্ধলাখের বেশী মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। বন্ধ হয়ে যেতে পারে যানবাহন চলাচল। কৃষি ও মৎস্যখাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইউপিতে ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বন্যার ভিডিও দেখুন এই লিংকে ‘জকিগঞ্জ আই টিভি’

বিভিন্ন এলাকার একাধিকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিরশ্রী ইউপির উজিরপুর, বড়চালিয়া, সোনাপুর, খলাছড়া ইউপির বিভিন্ন স্থানে, জকিগঞ্জ পৌর এলাকার কেছরী ও মাইজকান্দী গ্রামে, জকিগঞ্জ সদর ইউপির বাখরশাল, মানিকপুর, রারাই, লালোগ্রাম, সুলতানপুর ইউপির ইছাপুর, সহিদাবাদ, ভক্তিপুর, পিল্লাকান্দী, গঙ্গাজল, বারঠাকুরী ইউপির উত্তরকুল, আমলশীদ, বারঠাকুরী, কসকনপুর ইউপির বিভিন্ন স্থানে ডাইকের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পৌর এলাকার কেছরীগ্রামের ডাইকে ভাঙ্গন দেখা দিলে জকিগঞ্জ শহর বন্যার কবলে পড়বে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যা পরিস্থিতি সময় সময় অবনতির দিকে যাচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বন্যার্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে ১শ মেট্রিকটন চাল ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে ত্রাণ আরও বৃদ্ধি করা হবে। বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি বেশী অবনতি ঘটলে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হবে।

জকিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও পল্লব হোম দাস জানান, বন্যা পরিস্থিতি সময় সময় অবনতি ঘটছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর ডাইক উপচে পানি গ্রামে ঢুকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে ১০০ মেট্রিকটন চাল ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদার কথা জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর