জকিগঞ্জ টুডে ডেস্ক:: বড় ধরনের কোন ঘটনা ছাড়াই জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা উপজেলার ৭৭টি ভোট কেন্দ্রের ৩শ ৫৩টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়।
নির্বাচনে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫শ ২০ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৬২ হাজার ৭শ ৪৮জন। এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে খুব বেশী ভোটারের উপস্থিতি দেখা যায়নি। অনেকটা আমেজহীন ভাবেই ভোটের আনুষ্টানিকতা শেষ হয়েছে।
রাতে উপজেলা ফলাফল কেন্দ্র থেকে সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন মোল্লা বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। ঘোষিত ফলাফলে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরী। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪৮ হাজার ২শ ৩৯টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মরতুজা আহমদ চৌধুরী দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৩শ ৫২ টি।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আল-ইসলাহ্ সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সবুর। তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩০হাজার ১শ ২৭ টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী উপজেলা শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজল কুমার সিংহ মাইক প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১২হাজার ১শ ৭৮টি।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা মাজেদা রওশন শ্যামলী। তিনি কলস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৫হাজার ৬শ ৬ টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সুলতানা বেগম ফুটবল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২৪হাজার ৮শ ৮২টি।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন বলেন, ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ৪০.৬২% ভোটার ভোট দিয়েছেন। ছোটখাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে জকিগঞ্জ উপজেলার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকের মাওলানা আব্দুস সবুর ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতীকের মাজেদা রওশন শ্যমলী নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোট চলাকালীন সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম ছিলো। ভোটারের মাঝে তেমন কোন উৎসাহ লক্ষ করা যায়নি। এরমধ্যে জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউনিয়নের তিরাশী ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ও ব্যালেট ছিনতাইর চেষ্টায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার হয়েছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ১৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে।
জানাগেছে, বিকেল ৩টার দিকে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সজল কুমার সিংহ ও মাওলানা আব্দুস সবুরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যালেট ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। জকিগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানিয়েছেন, জাল ভোটকে কেন্দ্র করে ব্যালেট ছিনতাইয়ের চেষ্ঠা করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ১৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। অন্যদিকে, দুপুরের দিকে পৌর এলাকার মাইজকান্দি মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির এজেন্টদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীর ৩ এজেন্ট আহত হন। ব্রম্মনগ্রাম ভোট সেন্টারে জাল ভোট দেয়ার দায়ে আওয়ামীলীগের দুই সমর্থককে আটক করে পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানাগেছে।
Leave a Reply