নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: সুরমা-কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের (ডাইক) ২৮টি স্থান মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সিলেট-৫ জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের সংসদ সদস্য মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ঝুকিপূর্ণ ডাইক পরিদর্শন করে দ্রæত মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ডিও লেটারও দিয়েছিলেন। তারপরও পানি উন্নয়ন বোর্ড ডাইকে কাজ করেনি। এতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই জকিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পরপর দু’বার ডাইকের ৭ টি স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। প্লাবিত হয় ঘরবাড়ি। ভেসে যায় ফসলি জমির ফসল, মাছ এবং নষ্ট হয় রাস্তাঘাট। দু’বারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন উপজেলার প্রায় দেড় লাখের বেশি মানুষ। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ওপর চরম ক্ষোভে রয়েছেন সাধারণ মানুষসহ জনপ্রতিনিধিগণও।
শনিবার জকিগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিরোধ কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী সহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন উপস্থিত হলে জকিগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে। সহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন জনপ্রতিনিধিগণের তোপের মুখে পড়েন।
এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে জনপ্রতিনিধিসহ উপস্থিত বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড শুস্ক মৌসুমে কাজ করে না। বর্ষা মৌসুমে যেনতেন প্রকারে কাজ করায় পানি উন্নয়নের টাকা পানিতেই যায়, কোন কাজে আসে না। জকিগঞ্জের জনপ্রতিনিধি এমনকি উপজেলা প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে তাদের ইচ্ছেমত কাজ করে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালির কারণে আজ পুরো জকিগঞ্জ বন্যায় ভাসছে। দেড়লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বন্যার পানিতে জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জসহ সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি উপজেলা পানিতে তলিয়ে গেছে। জনপ্রতিনিধিগণ দাবী জানিয়ে আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরেজমিনে এসে জনপ্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
জরুরী সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসলিম, জকিগঞ্জ সদর ইউপির চেয়ারম্যান আফতাব আহমদ, বারঠাকুরী ইউপির চেয়ারম্যান মহসিন মর্তুজা চৌধুরী টিপু, কসকনকপুর ইউপির চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন, পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল কালাম, আওয়ামী লীগ নেতা এমএজি বাবর, জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত পাল, রাজু আহমদ, আব্দুল হামিদ, ময়নুল হক, শিবলু আহমদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের সহকারী প্রকৌশলী সাজু শিকদার জানান, জকিগঞ্জে সুরমা কুশিয়ারার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের ৭টি স্থান ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ১৫ টি স্থানে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। শিগগিরই এসব কাজ সমাপ্ত করা হবে। বাকীগুলো পরবর্তীতে কাজ করা হবে।
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জানতে এই পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন।
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জানতে এই পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন।
Leave a Reply