র‍‍্যাবের হাতে ধরা পড়লো ১ কোটি ৪১ লাখ টাকার চালান, দুই গডফাদার গ্রেফতার

মাদকের নিরাপদ রুট জকিগঞ্জ, র‍‍্যাবের হাতে ধরা পড়লো এযাবৎ কালের চালান, দুই গডফাদার গ্রেফতার

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আসছে মাদকের বড় বড় চালান। মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা সিলেট জুড়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করে ঘাঁটি গেড়ে বসে আসে সীমান্তে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেও থামছেনা মাদকের আগ্রাসন। মাদক ব্যবসা করে অনেকেই হঠাৎ করে রাতারাতি হয়ে ওঠেছে সম্পদশালী। টেকনাফের পর জকিগঞ্জ সীমান্ত মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ রুট এমন তথ্যে জকিগঞ্জে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে জকিগঞ্জ থেকে বেশ কয়েকটি বড় চালান ধরা পড়েছে পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে কৌশল বদলাচ্ছে মাদক সিন্ডেকেটরা। তবুও রেহাই মেলছেনা।

সোমবার অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে জকিগঞ্জে র‍‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছে এযাবৎ কালের সবচেয়ে বড় ইয়াবার চালান। এ সময় গ্রেফতার হয়েছে জকিগঞ্জ পৌর এলাকার মাইজকান্দী গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে কুখ্যাত পেশাদার মাদক গডফাদার হোসাইন আহমদ হুশাই (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে সিরাজ উদ্দিন (৫১)। ওইদিন রাতে তাদেরকে জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে র‍‍্যাব-৯ এর সুবেদার মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হোসাইন আহমদ হুশাইর ঘর থেকে উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য ১ কোটি ৪১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার পুলিশ তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, হোসাইন আহমদ হুশাইর বিরুদ্ধে থানায় চুরি ও মাদকসহ মোট ৫ টি মামলা রয়েছে এবং সিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা আছে।

মঙ্গলবার র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. মশিহুর রহমান প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জকিগঞ্জ পৌর এলাকার মাইজকান্দী গ্রামের হোসাইন আহমদ হুশাইর বসতঘরে অভিযান চালিয়ে ৪৭ হাজার ১শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী হোসাইন আহমদ হুশাই ও একই গ্রামের সিরাজ উদ্দিন কে গ্রেফতার করেন। সিলেটে ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান এটাই বলে তিনি দাবী করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মাদকদ্রব্য ব্যবসার কথা স্বীকার করে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পরস্পরের সহযোগিতায় তারা সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে।

এলাকার একাধিক জানান, মোরগ বাজারের ফড়িয়া হোসাইন আহমদ হুশাই এক সময় অর্থকষ্টে দিন কাটাতেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো ছিলো পরিবারের অবস্থা। কিন্তু মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে রাতারাতি বাড়িতে দালান নির্মাণ করে অটাল সম্পত্তি গড়েছেন। কিনেছে জায়গা জমিও। টাকার গরমে গত পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলরও হতে চেয়েছিলো সে। তাছাড়াও তার বিরুদ্ধে মামলা রফাদফা করতে দালালির অভিযোগও রয়েছে। পুরো উপজেলার মাদক নেটওয়ার্ক হোসাইন আহমদ হুশাই নিয়ন্ত্রণ করতেন সেই বিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেট ছিলো। সিলেটের কোথাও মাদকের চালান আটক হলেই জকিগঞ্জের নাম ওঠে আসে। সীমান্তের উপজেলা জকিগঞ্জে হাত বাড়াইলেই মেলে মাদক। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের মুখে থাকা এ উপজেলাকে মাদকমুক্ত করতে এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে সচেতন মহল দাবী জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর