জকিগঞ্জে পুলিশ সোর্স জামালসহ সহযোগীদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন

জকিগঞ্জে কথিত সোর্স জামালসহ সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: জকিগঞ্জে সুপারী ব্যবসায়ীর কাছে র‌্যাব পুলিশ পরিচয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামি কথিত সোর্স জামাল আহমদ, জিল্লুর রহমান ও রুবেল আহমদসহ অজ্ঞাত আসামি গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার বিকেলের দিকে বাবুর বাজারে এ মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বৃহত্তর গঙ্গাজল এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. খসরু মিয়ার সভাপতিত্বে ও মামলার বাদী শিহাব উদ্দিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন গঙ্গাজল এলাকার মাসুক আহমদ, জামিল আহমদ, আব্দুর রহিম বেলা মিয়া, মখদ্দস আলী, সাজু আহমদ, নেজাম উদ্দিন, আসাদ উদ্দিন, কাসেম আহমদ, মনির উদ্দিন, জহির উদ্দিন, হাসান আহমদ, রুহেল আহমদ, বাবুল আহমদ, আব্দুল মুকিত, সেলিম আহমদ। এ সময় এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন অভিযোগ করা হয়, গঙ্গাজল গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে র‌্যাব-পুলিশের কথিত সোর্স দাবিদার জামাল আহমদের নেতৃত্বে একটি চক্র গড়ে ওঠেছে। এই চক্রটি সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে। কথিত পুলিশ সোর্স জামাল ও তার সহযোগীদের অত্যাচার ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছেন সাধারণ লোকজন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে নানা অপকর্ম করলেও কৌশলে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।

ভিডিও দেখুন এই লিংকে ‘জকিগঞ্জ আই টিভি’

সম্প্রতি সময়ে সুপারী ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিনকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে র‌্যাব-পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে কথিত পুলিশ সোর্স জামাল আহমদসহ তার সহযোগী জিল্লুর রহমান, রুবেল আহমদ ও অজ্ঞাত আরেকজন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও জামালসহ তার সহযোগী তিনজন ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। রহস্যজনক কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। মামলা তুলে নিতে আসামিরা বাদীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানী বন্ধে ও অবিলম্বে জামালসহ সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানান এলাকাবাসী। মামলার বাদী ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় তিনি জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে কথিত সোর্স জামালসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে। মামলা নং ০৭ তাং ১০/১১/২২। কিন্তু প্রধান আসামি জামাল আহমদসহ অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতার করছেন না মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে এবং মামলা তুলে না নিলে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে এমনটা তিনি দাবি করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার এসআই রিপন চন্দ্র দাস জানান, মানবন্ধনের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। এ কারণে আসামিদেরকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে তিনি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন
জানাগেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে গঙ্গাজল গ্রামের সুপারী ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিনের কাছে একই গ্রামের কথিত পুলিশ সোর্স জামালসহ আরও তিনজন মিলে র‌্যাব-পুলিশের পরিচয় দিয়ে মাদক মামলায় ব্যবসায়ী শিহাবকে ফাঁসানো ভয়ভীতি দেখিয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় শিহাব উদ্দিন বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ জামাল আহমদসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৪০৬/৪১৭/১৭০ পেনাল কোডে মামলা রেকর্ড করে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, কথিত পুলিশ সোর্স জামাল, জিল্লু, রুবেল ও অজ্ঞাত একজন সম্প্রতি সময়ে গঙ্গাজল গ্রামের মৃত আব্দুল মুছব্বিরের ছেলে সুপারী ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিনকে মোবাইল ফোনে কল করে নিজেদেরকে র‌্যাব ও পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে শিহাব মাদক ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। থানায় তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তার নাম অর্ন্তভূক্ত আছে। তাদেরকে ৩ লাখ টাকা না দিলে অবৈধ মালামাল দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে। কিন্তু সুপারী ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমা না থাকায় তিনি হতভম্ব হন এবং মোবাইল ফোনে জামালসহ তার সহযোগীদের কথোপকথন রেকর্ড করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর