জকিগঞ্জে দুই রির্টানিং কর্মকর্তার পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: জকিগঞ্জে সিল দেয়া ব্যালট, মুড়ি বই, ব্যালেট বাক্সের সীলগালা লক, নগদ টাকা, ফেন্সিডিলের খালি বোতলসহ গ্রেফতারকৃত রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও আরিফুল হকের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত সুমন চন্দ্র দুই রির্টানিং কর্মকর্তার পাঁচদিন করে রিমান্ড আবেদন করেছেন আদালতে। সোমবারে আসামীদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারী পঞ্চম ধাপের ইউপি ভোটের দিন বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের সময় জকিগঞ্জের মরিচা ভোট কেন্দ্রের সামনে থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সিল দেয়া ও খালি ব্যালট পেপার মোট ১২শ, মুড়ি বই ৮টি, ব্যালেট বাক্সের সিলগালা লক ৮টি, নগদ টাকা ১ লাখ সাড়ে ২১ হাজার, ফেন্সিডিলের খালি বোতল, কালো রঙের ঢাকা মেট্রো-ঠ ১৩-৭০২৮ গাড়ীসহ হাতেনাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শুক্কুর মাহমুদ মিয়ার হাতে ধরা পড়েন রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও আরিফুল হক। তাৎক্ষণিক কাজলসার ইউপি ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সুলতানপুর ইউপির গণিপুর ভোটকেন্দ্রেও সীল মারা ব্যালেট পেপার বাক্সে ভরার ঘটনায় উত্তেজিত ভোটাররা ঐ কেন্দ্রের ব্যালেট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দিলে গণিপুর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণও স্থগিত করা হয়।

এ ঘটনায় দুই রির্টানিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মরিচা ভোট কেন্দ্রের ইনচার্জ জৈন্তা থানার এ এসআই আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে স্থানীয় সরকার আইনে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত শাদমান সাকীব (৩২) উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আরিফুল হক (৩৬) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। নির্বাচনে তারা দুজন রির্টানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৬ জানুয়ারী রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে রির্টানিং কর্মকর্তা আরিফুল হক থানা হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শাদমান সাকীব কারাগারে ও আরিফুল হক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পরাজিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের অভিযোগ, এই দুই রির্টানিং কর্মকর্তা বড় অঙ্কের টাকা গ্রহণ করে অনেক প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রতিটি ইউপির প্রার্থীদেরকে ডেকে নিয়ে বড় অঙ্কের টাকা চুক্তি করেছিলেন। সেই চুক্তিমত দুই রির্টানিং কর্মকর্তা ভোট জালিয়াতি করেন ভোটের সারাদিন। শেষ পর্যন্ত বিকেলে ধরা পড়েন। পরাজিত প্রার্থীরা বির্তকিত এ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে ইতিমধ্যে সিলেটে ও ঢাকায় পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ইসির কাছেও লিখিত দিয়েছেন। প্রভাবমূলক কাস্টিং ভোটের ফলাফলের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলেও আভাস দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর