জকিগঞ্জে করোনায় কমিশন নিলেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা! পকেটে ঢুকেছে বড় অঙ্কের টাকা

এখলাছুর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: করোনা পরিস্থিতিতে জকিগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরকারের বরাদ্ধকৃত অনুদানের অর্থ থেকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা কমিশন নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একটি সূত্রে জানাগেছে, জকিগঞ্জ উপজেলার ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেরামত কাজ বাবদ ১ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা হারে এবং ১৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেড় লক্ষ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়। অনুদানের চেক প্রদানের সময় টেজারিকে টাকা দেওয়ার কথা বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ৫ হাজার টাকা করে কমিশন আদায় করেন।শিক্ষা কর্মকর্তার কমিশনের গড় হিসেব মিলিয়ে দেখা গেছে তিনি করোনাকালীন সময়ে উপজেলার ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মোট ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পকেটে ভরেছেন৷বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের সাথে এ নিয়ে কথা হলে তারাও শিক্ষা কর্মকর্তার কমিশন আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে চাকুরীতের সমস্যা দেখা দেয়ার আশঙ্কায় কেউই মুখ খুলতে পারছেন না। তারা এ সংবাদে তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
কমিশন আদায়কৃত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের খিলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নেয়া কমিশনের ৫ হাজার টাকা প্রতিবাদের মুখে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী জয়নাল আহমদের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা প্রায় ১ বছর পূর্বে জকিগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পরপরই তিনি শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন৷ এ নিয়ে তিনি শিক্ষকদের সাথে বৎস্যায়ও লিপ্ত হন। তাছাড়া কয়েকটি বিদ্যালয়ের মেরামত কাজ সন্তোষ জনক হলেও কাজের মান ভালো হয়নি বলে মন্তব্য করে তিনি উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসব বিষয় নিয়ে উপজেলার শিক্ষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
খিলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নেয়া কমিশনের ৫ হাজার টাকা গ্রহণ ও ফেরত দেয়া প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি অস্বীকার করেন। তবে কমিশনের গ্রহণের ও ফেরত দেয়ার ডকুমেন্ট এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বায়োজিদ খাঁনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে এ সংবাদ পরিবেশনের আগ পর্যন্ত জানাগেছে, কমিশন আদায়ের ঘটনাটি আড়ালে রাখতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে ম্যানেজ করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দু একজন শিক্ষক নেতা এ প্রতিবেদকের সাথে কথাও বলেছেন।তবে তারা নাম না প্রকাশের অনুরোধ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর