জকিগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মামলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকিব ও আরিফ খালাস

জকিগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মামলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকিব ও আরিফ খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জে সিল মারা ব্যালট পেপারসহ রিটার্নিং কর্মকর্তা সাদমান সাকিব ও আরিফুল হক জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের হাতে আটকের পর দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত সেই দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার জকিগঞ্জ জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শ্যামকান্ত সিনহা তাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামী পক্ষের আইনজীবি মোয়াজ্জেম হোসেন ও অ্যাডভোকেট কাওছার রশিদ বাহার। মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন সিএসআই বাহার উদ্দিন।

২০২২ সনের ৫ জানুয়ারী জকিগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিনে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ও তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এবং সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিয়ার উপস্থিতিতে কাজলসার ইউনিয়নের মরিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদমান সাকিব ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হককে আটক করা হয়। এ সময় ওই দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি তল্লাশি করে সিলমারা ১ হাজার ২০০ ব্যালেট পেপার এবং সিলবিহীন ৪৫৬ ব্যালেট পেপার, নগদ টাকা, ফেনসিডিল বোতল, বিভিন্ন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যের প্রতীকে ৪০০ করে মোট ১ হাজার ২০০ ব্যালটে সিল মারাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে কাজলাসার ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে সুলতানপুর ইউপির গণিপুর কেন্দ্রের ব্যালট ছিনতাই হওয়ায় ওই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত হয়।

এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন জৈন্তাপুর থানার এএসআই ও মরিচা ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আব্দুল হাকিম। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদমান সাকিব ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হককে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। নজিরবীহিন এ ঘটনায় সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে নির্বাচন কমিশন দু’জনকেই সাময়িকভাবে চাকুরিচুত্য করে। ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন সিলেটের তৎকালীন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিয়াসহ ১৭ জন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদমান সাকিব জকিগঞ্জ সদর, সুলতানপুর ও বারঠাকুরী ইউনিয়ন এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হক কাজলসার ও বারহাল ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক ছিল বলে গোয়েন্দা তথ্যে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন নিশ্চিত হয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছিলো বলে তখন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার সরকারি গাড়ী তল্লাশী করে কয়েকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচনী প্রতীকে সীল দেয়া ৪শত ব্যালট পেপার, সীল ছাড়া ৪শত ব্যালট পেপার, মুড়ি বই ৪টি, ইউপি সদস্য নির্বাচনের ব্যালট সীল দেয়া ও সীল ছাড়া ৪শত ও মুড়ি বই ৪টি, সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচন ব্যালট সীল দেয়া ও সীল ছাড়া মোট ৪শত ও মুড়ি বই ৪টি, ব্যালেট বাক্সের লক ৮টি, মোবাইল ফোন ৪টি, নগদ ১,২১,৫০০/= টাকা ও ১টি ফেনসিডিল বোতল তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর