আমলসীদ ত্রী মোহনায় ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত, কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আমলসীদ ত্রী মোহনায় ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত, কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: ভারতের বরাক নদী থেকে প্রবলবেগে পানি ডুকছে সিলেটের জকিগঞ্জের আমলসীদ ত্রী মোহনা দিয়ে। বৃহস্পতিবার মধ্যেরাতে ভারত থেকে আসা বরাক নদীর তীব্র ¯্রােতে সুরমা-কুশিয়ারা ও বরাতের মিলনস্থল আমলসীদ ত্রি মোহনায় ভয়াবহ আকারে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ স্থানে ভাঙনের কারণে পুরো উপজেলা জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যেরাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আমলসীদ ত্রি মোহনার এ ভাঙনের কারণে প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়াও এ পর্যন্ত পুরো উপজেলায় প্রায় ৩০/৩৫টি স্থানে নদীর ডাইক ভেঙেছে। অনেক স্থানে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক উপচে পানি লোকালয়েও ডুকছে। সুরমা-কুশিয়ারায় পানি এখনো বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী ভাঙনের কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেকটা ব্যহত হয়েছে। জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বানভাসি বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের তীব্র সংকটে ভুগছে। হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

ভয়াবহ বন্যার ভিডিও দেখুন এই লিংকে ‘জকিগঞ্জ আই টিভি’

উপজেলা প্রশাসন থেকে ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই দফায় ত্রাণ বরাদ্দ হয়েছে ৩৬ টন চাল ও একলাখ টাকা। তবে এ বরাদ্দ একদম অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। শুক্রবার বিকেলের দিকে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশাররফ হোসেন ও জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান। এ সময় তাঁরা বানভাসীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।

বানবাসি মানুষের অভিযোগ, পানিবন্দি অবস্থায় থাকলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির বড় সমস্যা। অনেক এলাকার নলকূপ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক এলাকায় খাবারের ব্যবস্থা হলেও বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হয়েছে। গৃহপালিত গবাদি পশুপাখি নিয়েও বেকায়দায় রয়েছেন।

বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে. বন্যায় ভেসে গেছে বির্স্তীন এলাকার ফসলি জমি, পুকুর, রাস্তাঘাট ও হাট বাজার। মৎস্য ও কৃষিখাতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে বানভাসী মানুষ। বানভাসী মানুষদের মাঝে শিশু খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) পল্লব হোম দাস জানান, ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় ৩৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ভয়াবহ বন্যা কবলিত ৯টি ইউপি এলাকার মানুষের জন্য এই ত্রাণ অপ্রতুল বলে তিনিও মনে করেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন। ভয়াবহ বন্যার মতো এত বড় মানবিক বিপর্যয় প্রশাসনের একার পক্ষে মোকাবেলা অনেকটা অসম্ভব। বেসরকারি সংস্থাসহ সর্বস্থরের মানুষকে বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ত্রাণ তৎপরতায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর