দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধ মেটাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভিয়েতনাম সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট গতকাল রোববার বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে কয়েকটি দেশের মধ্যকার বিরোধ মেটাতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
চীন ওই সাগরের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ দাবি করে আসছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে চীনের। দেশটির পাশাপাশি মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ব্রুনেই, ফিলিপাইন ও তাইওয়ানের মধ্যে বিরোধ আছে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে।
দক্ষিণ চীন সাগর অন্যতম ব্যস্ত জলপথ। প্রতিবছর ওই পথে লাখো কোটি ডলারের পণ্য নিয়ে নৌযান চলাচল করে। সেখানে বিতর্কিত জলসীমায় সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছে চীন। কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনও করে চীন। দেশটির হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ওই এলাকায় মার্কিন রণতরি টহল দিয়েছে। এ নিয়ে দুই দেশের বাগ্যুদ্ধ হয়েছে।
গতকাল ভিয়েতনামে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমি মধ্যস্থতায় সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমাকে বলবেন।’ নিজেকে বেশ ভালো মধ্যস্থতাকারী এবং সালিসকারী বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের অবস্থান সত্যিই সমস্যার সৃষ্টি করছে।
ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্র্যান দাই কুয়াং অবশ্য বলছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ সমঝোতা ও আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে এই বিরোধের মীমাংসা চান।
আর ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধু হতে হবে। মাথা গরম অনেকে চাইবে আমরা চীনে এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াই।’
দুতার্তে চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের পর থেকে ভিয়েতনামই হয়ে উঠেছে ওই অঞ্চলে চীনে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। গত জুলাইতে ভিয়েতনামকে সাগরের বিতর্কিত এলাকায় তেল উত্তোলনের কাজ বন্ধ রাখার জন্য চাপ দিয়েছিল চীন। তখন দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হয়।
তবে এই সপ্তাহে ভিয়েতনাম যাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। সেখানে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্প্রতি ট্রাম্পের চীন সফরের সময়ও দুই দেশের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
গতকালই ভিয়েতনাম থেকে ফিলিপাইনের উদ্দেশে রওনা দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের আঞ্চলিক জোট আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নেবেন।
ট্রাম্পের সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কমিউনিস্ট দেশ ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি, পরিবহন যোগাযোগ ও বিমান কেনাসহ বিভিন্ন চুক্তি করছে। এর মধ্যে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের দেড় শ কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান থেকে ইঞ্জিন এবং অন্যান্য সেবা নেবে।
Leave a Reply