খালেদা জিয়াকে পুরনো কারাগারে নেয়া হচ্ছে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায়ের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে। সাদা রঙয়ের একটি গাড়িতে করে তাকে পুরনো কারাগারে নেওয়া হয়।

এরআগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলার অন্য আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর খালোদা জিয়াসহ অপর আসামিদের আদালত থেকে বের করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

আদালত বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। বয়স ও সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হল। মোট ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের বিশেষ অংশ পাঠ করেন বিচারক।

রায় ঘোষণার সময় খালেদা জিয়া ছাড়াও অপর দুই আসামি সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে দুপুর পৌনে ২টায় আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। তারও আগে দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর গুলশানের বাসভবন থেকে তিনি আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার গাড়ি বহর হাতিরঝিল হয়ে মগবাজারের দিকে যাওয়ার সময় হঠাৎ শত শত নেতাকর্মী বের হয়ে আসেন। তারা খালেদা জিয়ার গাড়ি ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে গাড়ি বহর কিছুক্ষণ থেমে থাকলেও পরে ধীরে ধীরে গাড়ি চলতে থাকে।

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা কাকরাইল পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়ে মারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ সেখান থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই মামলার প্রধান আসামি। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, তার ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলার শুরু থেকেই তারেক রহমান, ড. কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক।

এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলাটি করে দুদক।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সৌদি আরব থেকে এতিমদের জন্য আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন। ১৩ মাস তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৩৬ কার্যদিবসে ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ, ২৮ কার্যদিবসে আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থন ও ১৬ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।

বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ মামলায় নিম্ন আদালতে বিচারকাজ শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর